ইউক্রেনে বিদেশী সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যদি পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে সেনা পাঠায়, তবে এটি রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে। মস্কোর দাবি, এটি কোনো শান্তিরক্ষী মিশন নয় বরং তাদের সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি হুমকি।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর কথা ভাবছে। তবে রাশিয়ার মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্ব প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। দেশটির কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইউক্রেনে যদি কোনও বিদেশী সেনা মোতায়েন করা হয়, তাহলে রাশিয়া এটিকে সরাসরি সামরিক আগ্রাসন বলে মনে করবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করেছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান নিষিদ্ধ করা, দেশটিতে কোনো বিদেশি সেনা মোতায়েন না করা, রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলগুলোকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান এবং ন্যাটোর পূর্ব দিকে সম্প্রসারণ বন্ধ করা। মস্কো হুঁশিয়ারি দিয়েছে, এসব দাবি মানা না হলে যুদ্ধ আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।

এ পরিস্থিতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে তিনি ৩০ দিনের সাময়িক বিরতির পক্ষে মত দিয়েছেন। তার মতে, এই সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী শান্তির পথ খুঁজতে পারে এবং সংঘাতের মূল কারণগুলো সমাধান করা সম্ভব। দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে, যাতে ইউক্রেন সংকটের প্রকৃত কারণগুলোর সমাধান করা হয়, বিশেষ করে ন্যাটোর পূর্ব দিকে সম্প্রসারণের বিষয়টি।
তবে এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেই বিশ্বজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক আশঙ্কা করছেন, এই সংঘাত বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও ন্যাটোর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তার ওপর নির্ভর করছে ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ। বিশ্বের নজর এখন পশ্চিমা দেশগুলোর সিদ্ধান্তের দিকে।